ভালবাসার ডাকপিয়ন (the cafe of love)
শেষ বিকেলের গল্পby Samiya Sami
ইদানিং বেশ ভাল সময় কাটছে আমার। কোনকিছুর নিয়ম মেনে করতে হচ্ছে না। যখন ইছ্ছা ঘুম থেকে উঠছি, যখন ইছ্ছা খাচ্ছি, টিভি দেখছি, গেমস খেলছি,কেউ কিছুই বলছে না। সবার এক্সট্রা কেয়ার পাচ্ছি। ক্লাস করেতে হচ্ছে না, assignment, class test,mock test এগুলো থেকে বেঁচে গেছি। এখন আমি প্রায়ই ঘুরতে বের হই। এখন ভাইয়াই আমাকে নিয়ে যায় বাইরে, এত ব্যস্ততার ফাঁকেও। আগে কত বলতাম আমার ভাল লাগে না বন্দি জীবন আমি বাইরে যাব, প্লিজ আমাকে নিয়ে কেউ বের হও। কাল ঘুরে এলাম বই মেলা থেকে। সবই ভাল যাচ্ছিল কিন্তু যখন পেইনটা শুরু হয় তখন আর সহ্য করতে পারি না। মনে হয় যেন পৃথিবীর সমস্ত মানুষ এর ব্যথা আমার উপর এসে চেপেছে। কিন্তু কিছু করার নাই। আমি হাজার লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেও পারি না। সবাই বুঝে যায়্।
আর তখন সবাই অস্থির হয়ে যায়্। মনে হয় যেন আমার ব্যথার প্রতিটি অনুভুতি ওদের নিউরন বেয়ে মস্তিশ্কে চলে যাচ্ছে। এখন কেউ আর আগের মত হাশি খুশি নাই। সবাই কেমন মন মরা হয়ে থাকে। অনেক কষ্ট করে আমার সামনে সৌজন্যতার একটা হাসি বজায় রাখে। মা দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছে, মনে হয় যেন দেহে প্রান আছে কিন্তু প্রান্জলতা নাই। বাবা ও ৯-৫ টা অফিস ঠিকই করছে কিন্তু রোবটের মত হয়ে গেছে,কোন অনুভুতি নাই। আর আমার ভাই আর ছোট বোন এর কথা কি বলব? যারা এই পরিবারে সারাদিন হইচই করতাম অথচ এখন মনে হয় নীরব কোন ভুতের বাড়ি। একটা পিন পরলেও শব্দ শোনা যায়্। ঘড়ি গুলোর টিক টিক শব্দ শুনতে পাই সারাক্ষন। মনে হয় ওরা যেন আমাকে বলে দিচ্ছে আমার গন্তব্যে যাবার সময় এসেছে। মাঝে মাঝে ক্লাসে যাই ভাল লাগলে।ভার্সিটির সবাই জানে আমার অসুস্থতার কথা তাই কেউ কিছু বলে না। হোমটাস্ক না করলে কিছু বলে না টিচার রা । ফ্রেন্ডরা অনেক ভাল ব্যবহার করে। কিন্তু আগের মত আর কেউ ফান করে না আমার সাথে। আর কেউ বলে না সামিয়া চল আজ সবাই মিলে ফুচকা খেতে যাই, চল যাই টিএসসিতে যেয়ে আড্ডা দিয়ে আসি।
সবাই এখন আমাকে ক্যান্টিন এ নিয়ে গিয়ে কি খাব তাই খাওয়ায়, গিফট দেয়। ফ্রেন্ডরা মাঝে মাঝেই বাসায় আসে। কিন্তু একজন ফ্রেন্ড আছে কিনা কখনই আসে না আমার বাসায়।যার সাথে আমার বন্ধুত্ত ভার্সিটি লাইফের এর প্রথম দিন থেকেই...এই ২জন কে আলাদা কেউ কখনও দেখেনি। একদম শিক্ষক মহল থেকে শুরু করে ছাত্র সবাই জানতো আমাদের বন্ধুত্তের কথা। আমি টুম্পার কথা বলছি। আমরা প্রায়ই বলতাম এই ক্যাম্পাস এ একজন একজনকে ছাড়া এতিম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সত্যি টুম্পা এতিম হতে যাচ্ছে। ও আমাকে কাল অনেক কেঁদে বলেছিল, সামিয়া দেখ প্লিজ আমাকে ছেড়ে তুই যাস না। আমি এতিম হয়ে যাব। ও আর আগের মত পড়ালেখা করেনা, কিন্তু করবে কিভাবে? আমি তো পড়ছি না ওর সাথে আমরা সব কিছু একসাথে পড়তাম, নোট্স লিখতাম, স্কাইপি তে ম্যাথ সলভ করতাম। এখন আর ও টেস্ট এ বেশি মার্কস পায় না, কারন আমি ও যে পাই না। আমাদের বন্ধুত্ত এমনি যে স্যার যদি এক্সাম টাইমে এ ২জন কে সরিয়ে বসাত তবুও এক মার্কস পেতাম। মাঝে মাঝে ও ফার্স্ট হত মাঝে মাঝে আমি ফার্স্ট হতাম্। এটাই খারাপ লাগে যে ফান গুলো করতে পারছি না।
পড়তে না বসার জন্য বকুনি শুনছি না। একটা এক্সাম এ কম মার্ক্স পেলে টিচাররা আর বলবে না, আপনী আর মানুষ হইলেন না। কিন্তু আমার কি করার আছে এখানে, ভাগ্যকে মেনে নেয়া ছাড়া। কালকে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, মা ভেবেছে আমি বুঝি ঘুমিয়েছি, আসলে আমি ঘুমাই নাই। আমি মার রুমে এ গিয়ে দেখি মা একেবারে ছোট শিশুর মত কাঁদছে, ছোট বোনটা আমার সাথেই ঘুমায়। ও আর জোরে কাঁদতে পারে না, কাথা মুড়ি দিয়ে কাঁদে। আর বাবার কথা কি বলবো, মনে হয় যেন এখনি হার্ট এটাক করবে। ভাইয়াও পুরা নির্বিকার হয়ে গেছে। আমি তবু চেষ্টা করি হাসি খুশি থাকার,ওদের কষ্ট দুর করার।
আমার এখন বড় বাঁচতে ইচ্ছা করে। আমার জন্য না, আমার চারপাশের মানুষের জন্য। আমার পৃথিবীটা বেশি বড় না, অনেক ছোট... তাই এই ছোট পৃথিবীর মানুষগুলোকে কষ্ট দিতে চাই না।ওদের কষ্ট ভোলাতে এতদিন যা করিনি, এখন তাই করছি। যেমন আজ করলাম কি, ইচ্ছা মত সাজু-গুজু করলাম। যেটা আমাকে কেউ কখনও করাতে পারেনি।আর আশ্চর্য একটা বিষয় খেয়াল করলাম সাজাটা অনেক কঠিন কাজ। আর নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করলাম, কারন আমাকে অনেক সুন্দর লাগছিল। নিজেকেই চিনতে পারছিলামনা। কালো হলেও দারুন লাগছিল আমাকে সাজার পর। আমি এখনও আমার ছেলেমানুষী গুলো চালিয়ে যাচ্ছি। আশা রাখি মরার আগ দিন পর্যন্ত আমি হার মানবো না। কিছুতেই হার মানব না, সামান্য ক্যান্সারের এর কাছে।চাওয়া শুধু এতটুকুই যেন আমার মৃত্যুর শোঁক আমার পৃথিবীর মানুষগুলো খুব জলদি কাটিয়ে উঠতে পারে। এটাই আমার শেষ চাওয়া...
আর তখন সবাই অস্থির হয়ে যায়্। মনে হয় যেন আমার ব্যথার প্রতিটি অনুভুতি ওদের নিউরন বেয়ে মস্তিশ্কে চলে যাচ্ছে। এখন কেউ আর আগের মত হাশি খুশি নাই। সবাই কেমন মন মরা হয়ে থাকে। অনেক কষ্ট করে আমার সামনে সৌজন্যতার একটা হাসি বজায় রাখে। মা দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছে, মনে হয় যেন দেহে প্রান আছে কিন্তু প্রান্জলতা নাই। বাবা ও ৯-৫ টা অফিস ঠিকই করছে কিন্তু রোবটের মত হয়ে গেছে,কোন অনুভুতি নাই। আর আমার ভাই আর ছোট বোন এর কথা কি বলব? যারা এই পরিবারে সারাদিন হইচই করতাম অথচ এখন মনে হয় নীরব কোন ভুতের বাড়ি। একটা পিন পরলেও শব্দ শোনা যায়্। ঘড়ি গুলোর টিক টিক শব্দ শুনতে পাই সারাক্ষন। মনে হয় ওরা যেন আমাকে বলে দিচ্ছে আমার গন্তব্যে যাবার সময় এসেছে। মাঝে মাঝে ক্লাসে যাই ভাল লাগলে।ভার্সিটির সবাই জানে আমার অসুস্থতার কথা তাই কেউ কিছু বলে না। হোমটাস্ক না করলে কিছু বলে না টিচার রা । ফ্রেন্ডরা অনেক ভাল ব্যবহার করে। কিন্তু আগের মত আর কেউ ফান করে না আমার সাথে। আর কেউ বলে না সামিয়া চল আজ সবাই মিলে ফুচকা খেতে যাই, চল যাই টিএসসিতে যেয়ে আড্ডা দিয়ে আসি।
সবাই এখন আমাকে ক্যান্টিন এ নিয়ে গিয়ে কি খাব তাই খাওয়ায়, গিফট দেয়। ফ্রেন্ডরা মাঝে মাঝেই বাসায় আসে। কিন্তু একজন ফ্রেন্ড আছে কিনা কখনই আসে না আমার বাসায়।যার সাথে আমার বন্ধুত্ত ভার্সিটি লাইফের এর প্রথম দিন থেকেই...এই ২জন কে আলাদা কেউ কখনও দেখেনি। একদম শিক্ষক মহল থেকে শুরু করে ছাত্র সবাই জানতো আমাদের বন্ধুত্তের কথা। আমি টুম্পার কথা বলছি। আমরা প্রায়ই বলতাম এই ক্যাম্পাস এ একজন একজনকে ছাড়া এতিম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সত্যি টুম্পা এতিম হতে যাচ্ছে। ও আমাকে কাল অনেক কেঁদে বলেছিল, সামিয়া দেখ প্লিজ আমাকে ছেড়ে তুই যাস না। আমি এতিম হয়ে যাব। ও আর আগের মত পড়ালেখা করেনা, কিন্তু করবে কিভাবে? আমি তো পড়ছি না ওর সাথে আমরা সব কিছু একসাথে পড়তাম, নোট্স লিখতাম, স্কাইপি তে ম্যাথ সলভ করতাম। এখন আর ও টেস্ট এ বেশি মার্কস পায় না, কারন আমি ও যে পাই না। আমাদের বন্ধুত্ত এমনি যে স্যার যদি এক্সাম টাইমে এ ২জন কে সরিয়ে বসাত তবুও এক মার্কস পেতাম। মাঝে মাঝে ও ফার্স্ট হত মাঝে মাঝে আমি ফার্স্ট হতাম্। এটাই খারাপ লাগে যে ফান গুলো করতে পারছি না।
পড়তে না বসার জন্য বকুনি শুনছি না। একটা এক্সাম এ কম মার্ক্স পেলে টিচাররা আর বলবে না, আপনী আর মানুষ হইলেন না। কিন্তু আমার কি করার আছে এখানে, ভাগ্যকে মেনে নেয়া ছাড়া। কালকে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, মা ভেবেছে আমি বুঝি ঘুমিয়েছি, আসলে আমি ঘুমাই নাই। আমি মার রুমে এ গিয়ে দেখি মা একেবারে ছোট শিশুর মত কাঁদছে, ছোট বোনটা আমার সাথেই ঘুমায়। ও আর জোরে কাঁদতে পারে না, কাথা মুড়ি দিয়ে কাঁদে। আর বাবার কথা কি বলবো, মনে হয় যেন এখনি হার্ট এটাক করবে। ভাইয়াও পুরা নির্বিকার হয়ে গেছে। আমি তবু চেষ্টা করি হাসি খুশি থাকার,ওদের কষ্ট দুর করার।
আমার এখন বড় বাঁচতে ইচ্ছা করে। আমার জন্য না, আমার চারপাশের মানুষের জন্য। আমার পৃথিবীটা বেশি বড় না, অনেক ছোট... তাই এই ছোট পৃথিবীর মানুষগুলোকে কষ্ট দিতে চাই না।ওদের কষ্ট ভোলাতে এতদিন যা করিনি, এখন তাই করছি। যেমন আজ করলাম কি, ইচ্ছা মত সাজু-গুজু করলাম। যেটা আমাকে কেউ কখনও করাতে পারেনি।আর আশ্চর্য একটা বিষয় খেয়াল করলাম সাজাটা অনেক কঠিন কাজ। আর নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করলাম, কারন আমাকে অনেক সুন্দর লাগছিল। নিজেকেই চিনতে পারছিলামনা। কালো হলেও দারুন লাগছিল আমাকে সাজার পর। আমি এখনও আমার ছেলেমানুষী গুলো চালিয়ে যাচ্ছি। আশা রাখি মরার আগ দিন পর্যন্ত আমি হার মানবো না। কিছুতেই হার মানব না, সামান্য ক্যান্সারের এর কাছে।চাওয়া শুধু এতটুকুই যেন আমার মৃত্যুর শোঁক আমার পৃথিবীর মানুষগুলো খুব জলদি কাটিয়ে উঠতে পারে। এটাই আমার শেষ চাওয়া...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন