সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

একটা গল্প বলি...


একটা গল্প বলি...

এক দেশে একটা মেয়ে ছিলমেয়েটির একটা নিজের জগত ছিল, সেই জগত নিয়েই সে ব্যস্ত থাকতো সারাদিন...বই পড়তো, গান শুনত, মাঝে মাঝে গাইত, বৃষ্টিতে ভিজত আর স্বপ্ন দেখত সেকি স্বপ্ন দেখত? স্বপ্ন দেখত একজনের হাত ধরে কাশবনের মধ্যে দিয়ে বহুদূর হেঁটে যাওয়ার...তার পরনে থাকবে লাল পাড়ের শাড়ি, হাত ভরা থাকবে লাল কাঁচের চুড়ি, কপালে থাকবে লাল একটা টিপ...আর সেই মানুষটি পড়বে সাদা পাঞ্জাবী আর কালো জিন্স...অদ্ভুত স্বপ্ন, তাই না? হুম, মেয়েটা এসব অদ্ভুত স্বপ্নই দেখত...এই স্বপ্ন দেখেই সে কাটিয়ে দিলো তার ১৮টি বসন্ত...

হঠাৎ একদিন ঝড়ের বেগে সেই মানুষটির আবির্ভাব হল, যার স্বপ্ন দেখেছে সে এতগুলো দিন! স্বপ্ন সত্যি হওয়ার যে কি আনন্দ, সেটা সেইদিন বুঝতে পারলো মেয়েটিএক অদ্ভুত রকম ভালো লাগা কাজ করতে লাগলো! তার জীবন বৃত্তটা কেন্দ্র খুঁজে পেল 
এখন ছেলেটির কথা বলি...

ছেলেটি ছিল বড্ড পাগলমেয়েটিকে খুব বেশি ভালোবাসতোমেয়েটির মুখে একটু হাসি দেখার জন্য আকাশ পাতাল এক করে ফেলত সেআর যখন মেয়েটা রাগ করে গাল ফুলিয়ে বসে থাকতো, তখন যেন তার পৃথিবী অন্ধকার হয়ে যেত! মেয়েটিকে একটু খুশি করার জন্য সে নানা রকম পাগলামি করতমেয়েটির সাথে কথা বলবার জন্য বারান্দায় বসে মশার কামড় খেত! মেয়েটির জন্য কবিতা লিখত, মাঝে মাঝে গান গেয়ে শুনাতমেয়েটা গিটার বাজানো পছন্দ করে বলে সে গিটার বাজানো শিখতে শুরু করল...আরও কতো কি!! পাগল একটা!!
মেয়েটির কাছে এসবকিছুই একটা স্বপ্নের মতো মনে হতো! এতো ভালোবাসা কারো কপালে থাকে!! নিজের ভাগ্যকে একদমই বিশ্বাস হতো না!! তারপর যখন সেই মানুষটির কণ্ঠে ভালোবাসিশব্দটি শুনত, তখন বিশ্বাস হতো যে এটা বাস্তব...

মেয়েটি গল্প পড়তে খুব বেশি পছন্দ করততাই ছেলেটি একদিন তাকে একটা উপহার দিলো, ভালোবাসায় ভরা কিছু মানুষের গল্পআজ সেই উপহারের পরিধি অনেক বিস্তৃতসেই উপহারের অংশ আপনারা সবাইহাঁটিহাঁটি পা পা করে সেই উপহারের সাথে জড়িয়ে গেছেন প্রায় চব্বিশ হাজার মানুষ!!!

আজকের এই বিশেষ দিনটাতে সেই মানুষটিকে বলছি...

তুমি আমার জীবনের অনেক বড় একটা প্রাপ্তি...
সবসময় ভালো থেকো তুমি...
সবসময় হাসিমুখে থেকো...
আর কিছু চাই না...
তোমাকে অনেক ভালোবাসি...

Note

কোনো এক শীতের সকালে,


কুয়াশা মোড়া সূর্যকে প্রশ্ন করেছিলাম------ভালোবাসা কি?


সূর্য বলেছিলো,


আমার আলোয় ঝলসে উঠা একফোঁটা শিশির


বিন্দুই ভালোবাসা । সুন্দর কোনো এক বিকেলে,



স্রোতস্বিনী কোনো নদীকে প্রশ্ন



করেছিলাম------স্বপ্ন কি?



নদী বলেছিলো,



সমস্ত বাধা অতিক্রম করে সমুদ্রের



পানে ছুটে যাওয়াই স্বপ্ন । নির্ঘুম এক রাতে,



মেঘমুক্ত নির্মল আকাশকে প্রশ্ন



করেছিলাম------সুখ কি?



আকাশ বলেছিলো,



আমার বুকে হাজারো তারার ভীড়ে চাঁদের



মিষ্টি হাসিটাই সুখ । কোনো এক ব্যাথাভরা সন্ধ্যায়,



আমায় একজন প্রশ্ন করেছিলো------কষ্ট কি?



আমি বলেছিলাম,



হৃদয় উজাড় করে ভালোবেসে ভালোবাসার



বিনিময়ে অবহেলা পাওয়ার নামই কষ্ট ।



অনাকাঙ্খিত প্রশ্নগুলো অবিরত প্রকিতির মাঝে



রেখে যাই.........................

Note

কোনো এক শীতের সকালে,


কুয়াশা মোড়া সূর্যকে প্রশ্ন করেছিলাম------ভালোবাসা কি?


সূর্য বলেছিলো,


আমার আলোয় ঝলসে উঠা একফোঁটা শিশির


বিন্দুই ভালোবাসা । সুন্দর কোনো এক বিকেলে,



স্রোতস্বিনী কোনো নদীকে প্রশ্ন



করেছিলাম------স্বপ্ন কি?



নদী বলেছিলো,



সমস্ত বাধা অতিক্রম করে সমুদ্রের



পানে ছুটে যাওয়াই স্বপ্ন । নির্ঘুম এক রাতে,



মেঘমুক্ত নির্মল আকাশকে প্রশ্ন



করেছিলাম------সুখ কি?



আকাশ বলেছিলো,



আমার বুকে হাজারো তারার ভীড়ে চাঁদের



মিষ্টি হাসিটাই সুখ । কোনো এক ব্যাথাভরা সন্ধ্যায়,



আমায় একজন প্রশ্ন করেছিলো------কষ্ট কি?



আমি বলেছিলাম,



হৃদয় উজাড় করে ভালোবেসে ভালোবাসার



বিনিময়ে অবহেলা পাওয়ার নামই কষ্ট ।



অনাকাঙ্খিত প্রশ্নগুলো অবিরত প্রকিতির মাঝে



রেখে যাই.........................

রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

Note


একটা মেয়ে ছিল, একটা ছেলেকে অনেক ভালোবাসতো ছেলেটি প্রথমে মেয়েটিকে অবহেলা করত পাত্তা দিত না আস্তে আস্তে দুজনের বন্ধুত্ব গভীর হতে থাকে, ছেলেটি ধীরে ধীরে মেয়েটির ভালোবাসায় সারা দেয়দুজন জীবনটাকে সুন্দরভাবে পার করতে থাকে কিন্তু হঠাৎ মেয়েটি খেয়াল করে ছেলেটি বদলে যাচ্ছে তার সাথে কথা কম বলে মোবাইল বন্ধ থাকে একদিন মেয়েটি জানতে পারে ছেলেটির জীবনে অন্য কেও আছে মেয়েটি ভেঙ্গে পড়েকি করবে বুঝতে পারে না অনেক চেষ্টা করে ছেলেটিকে তার জীবনে ফিরিয়ে আনার কিন্তু ছেলেটি এমনি ওর থেকে আরো দূরে চলে যেতে থাকে একদিন এক রাতে মেয়েটি নিজের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেমেয়েটি মারা যায়রেখে যায় তার পরিবারের জন্যে অসীম কষ্ট মেয়েটির বাবা মেয়েটিকে খুব ভালোবাসতো কিন্তু তার আত্মহত্যার পর থেকে তার বাবা পাগল হয়ে যায়১০ বছর পর আজো মেয়েটির পরিবার তার বাবার চিকিৎসা একটি মানসিক হাসপাতালে করাচ্ছে মেয়েটির মা এবং বড় বোন কোনমতে তাদের সংসার চালাচ্ছে 

ছেলেটি কি হয়েছে তা আমি জানি না হয়ত বিয়ে করে সুখে আছে অথবা কোন কারনে কষ্টে আছে ছেলেটি তো মেয়েটিকে ধোঁকা দিয়ে গুনাহ করেছেই কিন্তু মেয়েটিও কি ভুল করেনি ? এমন আমরা অনেকেই করিঅনেকেই আত্মহত্যার চেষ্টা করি কেও মারা যায়, কেও বেঁচে থাকে একটা ছেলে বা মেয়ের ভালোবাসা আমাদের কাছে এত বড় হয়ে যায় যে সৃষ্টিকর্তার দেয়া জীবন মূল্যহীন হয়ে যায় ? বাবা মার ভালোবাসা কি এতই সস্তা ? তাদের ত্যাগ কি কোন মানেই রাখে না আমাদের জন্যে ? যে আত্মহত্যা করে সে তো চলে যায়, কিন্তু পেছনে রেখে যায় এক অভিশাপ যা তার পরিবার, কাছের মানুষকে ধ্বংস করে দেয় দু বছরের প্রেম ২৫ বছরের বাবা মার সকল ভালোবাসা, ত্যাগ থেকে বড় হয়ে যায় আপনাদের বলছি যারা ভালোবাসায় কষ্ট পেয়েছেন তাদেরকে বলছি, জীবনে সেই মানুষটিকে সবকিছু ভাববেন না, যে আপনাকে কষ্ট দিয়েছে ভালোমতো তাকিয়ে দেখুন আশেপাশে এমন অনেকেই আছে যে শুধু আপনার মুখের হাসি দেখে বেঁচে থাকে কারো জন্য আপনি কিছুই না, কিন্তু আপনার বাবা মার জন্যে আপনি তার পৃথিবী সেই পৃথিবীকে এভাবে নষ্ট করবেন না  
আমার কথায় কেও দুঃখ পেয়ে থাকলে মাফ করে দিবেন কাওকে কষ্ট দিতে কথাগুলো লিখিনি

Note



একটা মেয়ে ছিল, একটা ছেলেকে অনেক ভালোবাসতো ।


ছেলেটি প্রথমে মেয়েটিকে অবহেলা করত । পাত্তা দিত না । আস্তে 

আস্তে দুজনের বন্ধুত্ব গভীর হতে থাকে, ছেলেটি ধীরে ধীরে মেয়েটির 

ভালোবাসায় সারা দেয়। দুজন জীবনটাকে সুন্দরভাবে পার করতে 

থাকে । কিন্তু হঠাৎ মেয়েটি খেয়াল করে ছেলেটি বদলে যাচ্ছে । তার 

সাথে কথা কম বলে । মোবাইল বন্ধ থাকে । একদিন মেয়েটি জানতে 

পারে ছেলেটির জীবনে অন্য কেও আছে । মেয়েটি ভেঙ্গে পড়ে। কি 

করবে বুঝতে পারে না । অনেক চেষ্টা করে ছেলেটিকে তার জীবনে 

ফিরিয়ে আনার কিন্তু ছেলেটি এমনি ওর থেকে আরো দূরে চলে যেতে 

থাকে । একদিন এক রাতে মেয়েটি নিজের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে 

আত্মহত্যা করে। মেয়েটি মারা যায়। রেখে যায় তার পরিবারের জন্যে 

অসীম কষ্ট । মেয়েটির বাবা মেয়েটিকে খুব ভালোবাসতো । কিন্তু তার 

আত্মহত্যার পর থেকে তার বাবা পাগল হয়ে যায়। ১০ বছর পর 

আজো মেয়েটির পরিবার তার বাবার চিকিৎসা একটি মানসিক 

হাসপাতালে করাচ্ছে । মেয়েটির মা এবং বড় বোন কোনমতে তাদের 


সংসার চালাচ্ছে। 

ছেলেটি কি হয়েছে তা আমি জানি না । হয়ত বিয়ে করে সুখে আছে । 


অথবা কোন কারনে কষ্টে আছে । ছেলেটি তো মেয়েটিকে ধোঁকা দিয়ে 

গুনাহ করেছেই । কিন্তু মেয়েটিও কি ভুল করেনি ? এমন আমরা 

অনেকেই করি। অনেকেই আত্মহত্যার চেষ্টা করি । কেও মারা যায়, 

কেও বেঁচে থাকে । একটা ছেলে বা মেয়ের ভালোবাসা আমাদের কাছে 

এত বড় হয়ে যায় যে সৃষ্টিকর্তার দেয়া জীবন মূল্যহীন হয়ে যায় ? 

বাবা মার ভালোবাসা কি এতই সস্তা ? তাদের ত্যাগ কি কোন মানেই 

রাখে না আমাদের জন্যে ? যে আত্মহত্যা করে সে তো চলে যায়, কিন্তু 

পেছনে রেখে যায় এক অভিশাপ । যা তার পরিবার, কাছের মানুষকে 

ধ্বংস করে দেয় । দু বছরের প্রেম ২৫ বছরের বাবা মার সকল 

ভালোবাসা, ত্যাগ থেকে বড় হয়ে যায় । আপনাদের বলছি যারা 

ভালোবাসায় কষ্ট পেয়েছেন তাদেরকে বলছি, জীবনে সেই মানুষটিকে 

সবকিছু ভাববেন না, যে আপনাকে কষ্ট দিয়েছে । ভালোমতো তাকিয়ে 

দেখুন আশেপাশে এমন অনেকেই আছে যে শুধু আপনার মুখের হাসি 

দেখে বেঁচে থাকে । কারো জন্য আপনি কিছুই না, কিন্তু আপনার বাবা 

মার জন্যে আপনি তার পৃথিবী । সেই পৃথিবীকে এভাবে নষ্ট করবেন 

না । 


আমার কথায় কেও দুঃখ পেয়ে থাকলে মাফ করে দিবেন । কাওকে 

কষ্ট দিতে কথাগুলো লিখিনি ।

প্রতিশোধ ।।

প্রতিশোধ ।।

লিখেছেনঃ রোদশীঁ


" নাহ! ওদের হাত থেকে আমরা বোধহয় কখনোই বাচঁবো না"


এভাবেই নিজের রাগ প্রকাশ করছিলো আনিকা হোস্টেলে নতুন আসা মেয়ে নিতুর কাছে।


আনিকা পড়ে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার এ। কলেজের হোস্টেলে থাকে ও।হঠাৎ করে বাসার সবাইকে ছেড়ে এখানে একা একা থাকতে ওর প্রথম প্রথম বেশ খারাপ লাগতো।এখন সবার সাথে মানিয়ে নিয়েছে ও নিজেকে।বাসার কথা খুব বেশি মনে পড়ে না এখন।আর তাছাড়া এখানে সবাই ওর মতো একা থাকে,কারোর বাবা মাই সাথে থাকে না।তাই ওরা থাকতে পারলে ও কেন পারবে না।


এভাবেই নিজেকে দিনের পর স্বান্তনা দিয়েছে আনিকা।হোস্টেলে থাকতে ভালোই লাগে এখন।সকালে সবাই একসাথে কলেজে যায়।ক্লাস শেষে রুমে ফিরেই আড্ডা।আবার মাঝে মাঝে সবাই মিলে ঘুরতে যায় বিকালে।এভাবেই প্রতিটা দিন কেটে যাচ্ছে আনিকা ও তার বান্ধবীদের।ওদের হোস্টেল জীবনটা পুরোপুরি সুখের হতো যদি হোস্টেলে শুধু ওরা,কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের মেয়েরা থাকতো।


কলেজের হোস্টেল ১টা হওয়ায় ফার্স্ট ও সেকেন্ড ইয়ার একসাথে থাকে।সেকেন্ড ইয়ারের মেয়েরা ফার্স্ট ইয়ার কে কখনোই বেশি পাত্তা দিতে চায় না এবং যখন-তখন অপমান করে বসে।বিশেষ করে হোস্টেলের দোতালার ২৩০ নং রুমে থাকা সেকেন্ড ইয়ারের রুমকি,কনক ও মিতুল খুব বেশি জ্বালায় ফার্স্ট ইয়ারের মেয়েদের।আর যদি হোস্টেলে নতুন কোন মেয়ে আসে তাহলে তো কথাই নাই।অন্ততঃ ১ সপ্তাহ তার পিছনে লেগে থাকে ওরা।আনিকারা মাঝে মাঝে ভাবে ১টা মেয়ে কিভাবে অন্য মেয়েদের এতো বিরক্ত করে।


মাত্র ২ দিন হলো নীতু হোস্টেলে এসেছে আর ওরাও যথারীতি নীতুকে নাজেহাল করে ছাড়ছে।১ম দিন ডাইনিং এ যে অপমান করলো ওরা নীতুকে;বেচারী শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলো আনিকার দিকে আর আনিকা দাঁত কিড়মিড় করে বলল "ওদের হাত থেকে আমরা বোধহয় আর কখনোই বাচঁবো না।" ওদের কটুক্তি থেকে বাচঁতে তাড়াতাড়ি খাওয়া সেরে রুমে এসে দরজা লক করলো ওরা ৪জন-শ্রাবণ,সৌমি,আনিকা ও নীতু।


কিন্তু একটু পরেই দরজায় নক করা শুনে বুঝলো বজ্জাত ৩টা এসেছে।অনিচ্ছা স্বত্তেও দরজা খুলল শ্রাবণ।রমে ঢুকেই কনক বলল "ইহ!গন্ধে তোদের রুমে ঢোকা যাচ্ছে না,তোরা কি বিছানায় হাগু করিস নাকি? "রাগে শ্রাবণ কিছু বলতে পারলো না।তবে সৌমি বেশ রাগেই বলল "কনক আপু আমাদের পরীক্ষা কাল,আমরা এখন পড়বো।"এক ধমকে সৌমিকে চুপ করিয়ে দিলো কনক তারপর কিছুক্ষণ নীতুকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে চলে গেলো।নীতুর হোস্টেলের ১ম রাতটা কাটলো কান্না কাটি করে।


এধরনের যন্ত্রণা তবুও মেয়েরা সহজে মেনে নিতো,কিন্তু কনকদের ভয় দেখানো টাইপ জ্বালাতন হজম করতে মেয়েদের বেশ কষ্ট হতো।।


কনক কলেজের ১ ম্যাডামের কাছ থেকে জেনেছিলো যে অনেক বছর আগে হোস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে ১টা মেয়ে মারা গিয়েছিলো;হোস্টেলের সিঁড়িতে মেয়েটির রক্তাক্ত দেহ পাওয়া গিয়েছিলো।এটা স্রেফ ১টা দূর্ঘটনা ছিলো কিন্তু কনকরা হোস্টেলের মেয়েদের বলতো যে ঐ মেয়েটির আত্মা নাকি রাতে হোস্টেলের করিডর ধরে হাটাহাটি করে।যদিও কেউ কোনদিন এমন কিছুই দেখেনি কিন্তু কনকদের মুখে এই কথা শুনে ভয় সবাই ঠিকই পেতো।আর মাঝে মাঝে তো কনকরা কোন কোন মেয়েকে করিডরে দাড় করিয়ে রাখতো।।


কোন ১ সন্ধায় রুমকি ও মিতুল এমন কিছু করে মজা লোটার হামলা চালায় আনিকাদের রুমে।রুমে ঢুকেই আনিকাকে বলল "যা করিডরে গিয়ে দাড়িয়ে থাক,যতক্ষণ না আমরা তোকে ভিতরে আসতে বলি"।


বুকের ভিতর শুরু হওয়া সাইক্লোনকে পাত্তা না দিয়ে আনিকা করিডরে চলে এলো।হোস্টেলটা অনেক আগের বলে করিডরটা চওড়ায় অনেক বড়।করিডরের এক মাথায় নিচে নামার সিঁড়ি আর অন্য মাথায় সারি দিয়ে বাথরুম।হেমন্তের হালকা শীতে সন্ধা হলেও হোস্টেলের মেয়েরা যে যার রুমে দরজা লক করে হয়ত পড়ছে বা গল্প করছে।আর বাইরে নিস্তব্ধ পরিবেশে নিরেট অন্ধকারে একা দাড়িয়ে আছে আনিকা।অন্ধকার এতো গাড়ো কেন তা ভাবতেই আনিকার মনে পড়লো আজ অমাবস্যা।।


হঠাৎ এক ঝটকা ঠান্ডা হাওয়া বয়ে গেলো করিডরে।আনিকা দাড়িয়ে আছে ঠিক ওদের রুমের সামনে,করিডরের মাঝামাঝি।মনে হলো হাওয়াটা আসলো আনিকার ডানদিক অর্থাৎ সিঁড়ির দিক থেকে।আচমকা বয়ে যাওয়া হাওয়ার দিকে তাকিয়ে প্রায় আত্‌কে উঠলো আনিকা।অমাবস্যার রাত তবুও ষ্পস্ট দেখলো সিঁড়িতে কেউ দাড়িয়ে আছে।কে ওখানে ভবতেই একটুখানি আলো জ্বলে আবার নিভে গেলো।সেই আলোতে যা দেখল আনিকা তাতে তার শিরদাঁড়া বেয়ে একটা ঠান্ডা ভয়ের স্রোত বয়ে গেলো এবং কান ফাটানো চিৎকার দিয়ে সে পড়ে গেলো মেঝেতে।


ওদিকে সিঁড়িতে দাড়িয়ে থাকা কনক জোরে হাসতে যেয়ে থেমে গেলো।মুখে সস মেখে একটা ছোটো টর্চ ঠিক মুখের সামনে রেখে একবার অন করেই অফ করে দিয়েছিলো সে।রক্তাক্ত ১টা মুখ দেখেছে ভেবে ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে করিডরে পড়ে আছে আনিকা।এতটা করতে চায়নি কনক।দৌড়ে আনিকার কাছে গেলো সে।অন্য দিকে হোস্টেলের প্রায় সব মেয়ে করিডরে এসে হাজির।


রুমে নিয়ে গিয়ে মুখে পানি দিয়ে জ্ঞান ফেরানো হলো আনিকার।হোস্টেল সুপারের ঝাঁড়ি খেয়ে চুপচাপ এক কোণায় দাড়িয়ে আছে কনক,মিতুল ও রুমকি।এতে অবশ্য ওদের কিছুই হয়নি।তবে কনককে দেখে মনে হচ্ছে সে কিছুটা লজ্জিত।সে নিজে থেকেই আনিকাকে সরি বলে আসল ঘটনা খুলে বলল এবং ওরা ৩জনই বলল এ ধরনের ফাজলামি তারা আর করবে না।আনিকা স্বাভাবিক হওয়ার পর যে যার রুমে চলে গেলো।


কনকরা রুমে গিয়ে ঢুকলো তখন প্রায় রাত ১১টা বেজে গেছে।এত তাড়াতাড়ি ওরা ঘুমায় না তাই ৩জনে আড্ডা দিতে বসলো।গল্পে গল্পে যে কখন রাত ১টা বেজে গেছে ওরা টেরই পায়নি ।


ঘড়ির দিকে চোখ পড়া মাত্রই শুয়ে পড়লো মিতুল ও রুমকি আর বাথরুমে যাবে বলে বের হলো।পুরা হোস্টল তখন ঘুমিয়ে পড়েছে।কোনদিকে না তাকিয়ে সোজা বাথরুমে এসে ঢুকলো কনক।হাসি ঠাট্টায় এতক্ষণ মনে ছিলো না সন্ধার কথা;এখন মনে পড়লো এবং মনে মনে অনুতপ্ত হলো কনক।


হঠাৎই মৃদু শব্দ করে বাথরুমের লাইটটা নিভে গেলো।কনক এতটা ভীতু না হলেও এত রাতে হঠাৎ আলো নিভে যাওয়ার গাঁ ছমছম করে উঠলো ওর।হাতড়ে পাতড়ে বাথরুমের দেয়াল ধরে ধরে দরজা খুঁজতে লাগলো কনক।কারো নিঃশ্বাস ওর ঘাড়ে অনুভব করা মাত্রই পিছনে তাকালো কনক।কিন্তু তাকিয়ে লাভ কি;ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিছুই দেখতে পেলো না ও।অথচ নিজের ঘাড়ে কারো নিঃস্বাশ ফেলার মত গরম হাওয়া সে অনুভব করেছে;কিন্তু বাথরুমে তো আর কেউ নেই।


দৌড়ে ওখান থেকে চলে যেতে ইচ্ছা হলো কনকের।আরো দ্রুত দরজা খুঁজতে লাগলো সে।দরজার ছিটকানিতে হাত ঠেকা মাত্রই দরজা খুলে দৌড়ানো শুরু করলো কনক।দৌড়ে ৪-৫ কদম আসার পর কিছুতে ধাক্কা খেয়ে দাড়িয়ে যাওয়ার মত থামলো কনক।


স্পষ্ট দেখলো কেউ দাড়িয়ে আছে সিঁড়িতে।শুধু দাড়িয়েই আছে না আস্তে আস্তে সামনে আসতে শুরু করেছে।আর তখনি হঠাৎ কোথা থেকে একটুখানি আলো জ্বলে আবার নিভে গেলো।সেই আলোতে কনক দেখলো রক্তাক্ত বীভৎস একটা মেয়ের মুখ।তীব্র চিৎকার দিতে চাইলো কনক কিন্তু মুখ হা করলেও গলা দিয়ে কোন শব্দই বের হলো না।


এবার সে অনুভব করলো ঠিক তার পিছনেই কেউ দাড়িয়ে আছে।চিন্তাটা মাথায় আসায় পিছনে তাকাতেই আবারো আত্‌কে উঠলো কনক।ঠিক তার পিছনেই দাড়িয়ে আছে একটু আগে সিঁড়িতে দেখা রক্তাক্ত মেয়েটি,যার বীভৎস পঁচা গলা মুখটি কনকের ঠিক ১হাত সামনে।পঁচা মাংসের গন্ধে বমি এসে গেলো কনকের।তখনি মেয়েটি ১হাত বাড়িয়ে দিলো কনকের দিকে।এবার কনকের মুখ দিয়ে বিকট শব্দ বের হলো এবং সে জ্ঞান হারালো।


আর্শ্চয্যজনকভাবে তখনি বাথরুমের লাইটটা জ্বলে উঠলো। ।


কনকের জ্ঞান ফেরেনি আর কখনো,তাই সেদিন কি ঘটেছিলো কেউ জ্বানলো না কখনো।আনিকার সাথে কনক যা করেছিলো সেদিন সন্ধায়,ঠিক ১২ বছর আগে কোন এক সন্ধায় একই ঘটনা ঘটেছিলো ফার্স্ট ইয়ারের মেয়ে তাহিয়ার সাথে।আনিকা স্বাভাবিক হলেও তাহিয়া স্বাভাবিক হতে পারে নাই তাই অন্যমনষ্ক হয়ে ছাদে হাটাহাটি করার সময় নিচে পড়ে মারা যায় সে।হয়ত ১২ বছর পর প্রতিশোধ নিতে ফিরে এসেছিলো সে।।