বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

জানা অজানার গল্প

জানা অজানার গল্প

ভালোবাসা শব্দটা খুব মধুর । কিন্তু যারা ভালোবেসে কষ্ট ছাড়া আর কিছু পায়নি শুধু তারা জানে এই শব্দটা কতোটা কষ্টের। আমি জানিনা আমি আজ যা আপনাদের বলবো তা আপনারা কতোটা বিশ্বাস করবেন । কিন্তু এটি একটি সত্য ঘটনা । আপনাদের কাছে শুধু আমার একটাই জিজ্ঞাসা থাকবে , ছেলেটা আর মেয়েটা যা করেছিলো তা কি ঠিক ছিলো ?

ঘটনার শুরু একটা ছেলেকে দিয়ে । যে সারাক্ষণ হাসি , ফান , বন্ধুদের সাথে আড্ডা করে বেড়াতো । সারা বাসায় সে সবসময় হুলুস্থুল করে রাখতো । কাউকে সে কখনও দুখি দেখতে পারতো না । সবার খুব প্রিয় ছিল সে । ঘটনার সুত্রপাত হয় মিগ ৩৩ নামে এক সামাজিক ওয়েবসাইট থেকে । ছেলেটি মিগ এ লগিন করে একটি চ্যাট রুম এ যায় । সেখানে তার সাথে একটি মেয়ের পরিচয় হয় । ঘটনা ক্রমে তারা জানতে পারে যে তারা একই শহরের বাসিন্দা । তারপর তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয় । তাদের ভিতর আলাপ চারিতা চলতে থাকে । মেয়েটির সাথে কথা বলতে বলতে তার প্রতি ছেলেটি দুর্বল হয় পরে । এর দুদিন পর ছেলেটি মেয়েটিকে প্রপোজ করে বসে । মেয়েটি থতমত খেয়ে যায় । সে ছেলেটিকে বার বার না বলে । কিন্তু ছেলেটি ছাড়ার পাত্র ছিল না । সে মেয়েটিকে বার বার বোঝাতে থাকে । তখন মেয়েটি ছেলেটি কে বলে যে , তার মার মানসিক প্রবলেম আছে । কিন্তু ছেলেটি তা ও মেনে নেয় । এভাবে দুপুর ১২ টা থেকে শুরু করে রাত ৩ টা পর্যন্ত বুঝানোর পর মেয়েটি হ্যাঁ বলে । তাতে ছেলেটি যেন আকাশে ভাসতে থাকে। তারপর আস্তে আস্তে তাদের সম্পর্ক বাড়তে থাকে এবং প্রেমও চলতে থাকে । এপ্রিলের ২৪ তারিখ ছেলেটি প্রথম মেয়েটির সাথে দেখা করে । কিন্তু দেখা হওয়ার পর দেখা যায় মেয়েটি তার যোগ্য না । কিন্তু ছেলেটি তাও মেয়েটি কে মেনে নেয় । কারন যাকে সে না দেখে ভালবেসেছে তাকে কিভাবে সে কষ্ট দিবে । আর সে জানতো যে মেয়েটি ছোটোবেলা থেকে খুব কষ্ট পেয়ে মানুষ হয়েছে । তাই সে মেয়েটিকে সুখ দিতে চেয়ে ছিলো । তারপর তাদের প্রেম এগিয়ে যেতে থাকে । হঠাত একদিন মেয়েটি বুঝতে পারে ছেলেটি আসলেই তাকে অনেক বেশি ভালবাসে । সে নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে সুখি মানুষ মনে করতে থাকে । ছেলেটি আস্তে আস্তে মেয়েটিকে তার ফ্যামিলির সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে থাকে । ছেলেটির ফ্যামিলিয়ের সবাই মেয়েটিকে ছেলেটির কারনে মেনে নেয় । কারন ছেলেটি ছিল তার ফ্যামিলির প্রিয় পাত্র । মা বাবা এর একমাত্র সন্তান । তাই তারা ছেলেটির সুখের জন্য তাকে মেনে নেয় । মেয়েটিও ছিল তার মা বাবা এর একমাত্র সন্তান । কিন্তু তাদের ফ্যামিলি এই সম্পর্কটা সহজে মেনে নিতে পারে নি । তাই ছেলে আর মেয়েটি অপেক্ষা করার কথা চিন্তা করে । যাতে মেয়ের ফ্যামিলি ছেলেটিকে মেনে নেয় । কিন্তু তাদের সম্পর্কের কারনে মেয়ের ফেমিলিতে অশান্তির সৃষ্টি হয় । আর তাদের মেলা মেশায় বাধা আসতে থাকে । এর ভিতর মেয়েটির কলেজে ক্লাস শুরু হয় যায় । মেয়েটি তখন ছেলেটিকে ঠিকমতো সময় দিতে পারেনা । ছেলেটি তাতে কিছুতা কষ্ট পায় ।আর নিজেকেও তার পরালেখায় ব্যস্ত করে ফেলে । এভাবে সময় বয়ে যায় । ছেলে আর মেয়েটি ফোনে যোগাযোগ করতে থাকে । এর ভিতর মেয়েটির ফ্যামিলিও তাদের সম্পর্ক মেনে নিতে থাকে । মেয়েটির হটাত করে মনে হয় ছেলেটি তাকে আর আগের মত সময় দেয়না । কিন্তু ছেলেটি তখন তার পড়ালেখা আর বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে ব্যস্ত থাকতো । কিন্তু মেয়েটি তা সহ্য করতে পারেনি । তাই ছেলেটি মেয়েটির খুশির জন্য তার সব বন্ধুদের ছেড়ে দেয় । যে ছেলেটি এক সময় বন্ধুদের নিয়া থাকতো সে নিজেকে একলা করে ফেলে শুধু মাত্র ভালবাসার মানুষটির জন্য । কিন্তু তাতেও যেন কিছু হচ্ছে না । ছেলেটি হটাত করে বুঝতে পারে তার ভালোবাসার মানুষটি কেমন যেন তার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে । সে কোন হিসাব মেলাতে পারে না এর । এভাবে চলতে থাকে । এবং তাদের মাঝে দূরত্ব বারতে থাকে । এর জন্য ছেলেটির পড়ালেখার চাপটাই বেশি প্রভাব রেখেছিলো । তাই ছেলেটি ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ঠিকমতো যোগাযোগ রাখতে পারতোনা । এর ভিতর ছেলের আত্মীয়রা তাকে বলে যে তারা তার ভালোবাসার মানুষটিকে অন্য একটি ছেলের সাথে হাত ধরে ঘুরতে দেখেছে । ছেলেটি তা বিশ্বাস করেনি । কারন সে মেয়েটিকে খুব বিশ্বাস করতো । তাই সে মেয়েটিকে এই সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা করে না । কিন্তু এরপরেও সে একই কথা বার বার শুনতে পায় তার আপনজনদের কাছ থেকে । তাই সে একদিন মেয়েটিকে তা জিজ্ঞাসা করে । তখন মেয়েটি তাকে বলে যে সে যা শুনেছে সব সত্যি । তার সাথে অন্য একটি ছেলের সম্পর্ক রয়েছে । সে আর এই ছেলেটির সাথে সম্পর্ক রাখতে চাই না । ছেলেটি পুরো হতবাক হয় যায় তার ভালোবাসার মানুষটির কাছ থেকে এই ধরনের কথা শুনে । মেয়েটি ছেলেটিকে একলা রেখে চলে যায় । ছেলেটির সারাটা পৃথিবী যেন সে সাথে করে নিয়ে গেল । সেই ছেলেটি যেন সম্পূর্ণ পাল্টে গেল । একসময়য়ের চঞ্চল ছেলেটি হটাত করে তার সমস্ত চঞ্চলতা হারিয়ে ফেললো । এখন সে সম্পূর্ণ একা এক মানুষ । সবাই এখন অবাক হয় যায় তাকে দেখলে । কিন্তু কেউ তাকে কিছু বলে না । কারন তারা চায়না সে আঘাত পাক । ছেলেটি সব বুঝতে পারে । তাই সে সিধান্ত নেয় সে আগের মত হয় যাবে । কিন্তু সে তা র পারে না । তাই সে প্রতিনিয়ত ভালো থাকার হাসিখুশি থাকার অভিনয় করে যাচ্ছে । সবাইকে খুশি রাখছে । কিন্তু তার নিজের খুশি গুলো যেন কথায় হারিয়ে গেছে । আজো সে জানতে চায় কি ছিল তার ভুল । কেন এমন হয় গেলো তার জীবনটা । কেন সে চেনা মানুষের ভিড়ে আজ অনেক অচেনা । কেউ কি পারবে তার উত্তরটা দিতে ?

লিখেছেন-Anjon Kishore

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন