শনিবার, ২৪ মার্চ, ২০১২

“মা”


“মা”

‎** অসাধারণ একটি পোস্ট**

গল্পটা প্রথম যখন পড়ি নিজের অজান্তে চোখে পানি এসে গিয়েছিল,আমি কেঁদেছিলাম, আপনিও না কেঁদে পারবেন না বলেই আমার বিশ্বাস :'(

'আমি কি আমার ছেলেকে কোলে নিতে পারি?'
সদ্য মা হওয়া সুখী এক মহিলা ডাক্তারের কাছে জানতে চাইলেন।কিন্তু যখন তিনি তার সন্তানকে কোলে পেলেন তার চোখ ফেটে এল জল।তার শিশুটি যে আর সবার মত স্বাভাবিক না।শিশুটি জন্ম নিয়েছে দুটি কান ...ছাড়াই।
বছর গেল।দেখা গেল যে কান না থাকলেও ছেলেটি সবার মতই স্বাভাবিকভাবে শুনতে পায়। শুধু কান দুটির শারীরিক উপস্থিতি ছিল না।একদিন স্কুল থেকে বাসায় এসে মায়ের কোলে পড়ে কাঁদতে থাকল ছেলেটি।'স্কুলে ছেলেরা আমাকে কানহীন দানব বলে ক্ষেপিয়েছে',ছেলের কষ্টের কথা শুনে মাও কাঁদতে লাগলো।
হাতে গোনা কয়েকজন ভালো বন্ধু পেয়ে গেল সে,তাদের সাথেই থাকতো স্কুলের সময়টা।সাহিত্য আর মিউজিকে ক্লাসে আর সবার চেয়ে ভালোও করলো।
ফ্যামিলি ডাক্তার একবার একটি সুখবর নিয়ে আসলেন।তিনি বললেন যে ছেলের কান তিনি প্রতিস্থাপন করতে পারবেন,যদি কোনো সুস্থ মানুষের দুটি কান তাকে যোগার করে দেয়া হয়।অনেক খোঁজাখুজি করেও কাউকে পাওয়া গেল না কান দান করার জন্য।পুরো পরিবারের মন খারাপ।ছেলের মুখের দিকে তাকাতে পারছিল না বাবা-মা।
অবশেষে একদিন বাবা ছেলেকে সুখবরটি দিলেন।একজনকে পাওয়া গেছে যে তার কানদুটি দান করতে রাজি হয়েছে,কিন্তু শর্ত একটাই তার পরিচয় গোপন রাখতে হবে।
নির্দিষ্ট দিনে অপারেশন হলো।ছেলে কান ফিরে পেল,দুনিয়াতে এত সুখী সে নিজেকে কোনোদিনই ভাবেনি।
কিন্তু কার অবদানে সে আজ সুখী?এটা যে তাকে জানতেই হবে।তাকে একটা ধন্যবাদও যদি না দিতে পারে তাহলে যে তার জীবনই ব্যর্থ।কিন্তু বাবা জানাতে রাজী নয়।ছেলেটি খাওয়াদাওয়া বন্ধ দিল,শর্ত দিল,তাকে সেই মহানুভব ব্যাক্তির সাথে দেখা না করালে সে খাবে না।বাধ্য হয়ে তার বাবা তাকে জানাতে রাজী হলো।

সেই দিনটি ছিল ছেলের জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।বাবা তাকে তাদের বেডরুমে নিয়ে গেল এবং তার মায়ের ঘন কালো চুলগুলো দুহাত দিয়ে সরিয়ে দিল।ছেলেটি দেখলো যে তার মায়ের কানদুটি নেই।
ছেলেটি অঝরে কাঁদতে লাগলো,'কিন্তু মা,কোনোদিন নিজের এক টুকরো চুলও কাটতে দাওনি তুমি।'
আসলে প্রকৃত সৌন্দর্য বাহ্যিক নয়,প্রকৃ্ত সৌন্দর্য থাকে হৃদয়ে।প্রকৃত সম্পদ সেটা নয় যা দেখা যায়,প্রকৃ্ত সম্পদ সেটাই যা দেখা যায় না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন